ময়মনসিংহের নান্দাইলের দিনমজুরের ছেলে মো. সোহেল মিয়া (১৯) বাংলাদেশের একমাত্র অংশগ্রহণকারী হিসেবে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক প্যারা অলিম্পিকস-এ তায়কোয়ান্দো ইভেন্টে খেলতে যাচ্ছেন। ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি ইতিমধ্যে তার পাসপোর্ট প্রস্তুতির নির্দেশনা দিয়েছে।
তায়কোয়ান্দো দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় মার্শাল আর্ট, যা আত্মরক্ষা, যুদ্ধ কৌশল, খেলাধুলা, ব্যায়াম এবং ধ্যান-এর সমন্বয়। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্শাল আর্ট হিসেবে ১৯৮৯ সালে এটি স্বীকৃত হয়, আর ২০০০ সাল থেকে এটি অলিম্পিক ইভেন্ট হিসেবে খেলা হচ্ছে। বাংলাদেশে ১৯৯৯ সালে তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন গঠিত হয়। এবার ডিসেম্বরের ৭ থেকে ১৪ তারিখ ৪৫ দেশের অংশগ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আর্ন্তজাতিক প্যারা অলিম্পিকস অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ১১টি ইভেন্টে প্রতিযোগিতা হবে।
সোহেল মিয়ার জন্মগতভাবে দুই হাত কবজির পর থেকে বাঁকা। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে থামাতে পারেনি। তিনি স্থানীয় শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন এবং বিকেএসপিতে সাঁতার ও টেবিল টেনিসে প্রশিক্ষণ নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। সম্প্রতি ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিকে তায়কোয়ান্দো ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাকে বিশ্ব প্যারা অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই সীমিত। বাবা সুরুজ আলী দিনমজুরি করেন এবং মা ও দুই বোনসহ পরিবার খাবার-দাবারের জন্য সংগ্রাম করছেন। পাসপোর্ট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এখনও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সোহেল মিয়া বলেন, “খেলাধুলার প্রতি আমার আগ্রহ অনেক। প্যারা অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে খুশি হলেও ঢাকা যাওয়ার খরচের জন্য সাহায্য দরকার।”
ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটির মহাসচিব ড. মারুফ আহম্মেদ মৃদুল জানান, “সোহেল অত্যন্ত প্রতিভাবান খেলোয়ার। সাঁতার ও টেবিল টেনিসেও তিনি পারদর্শী। নতুন ইভেন্ট তায়কোয়ান্দোতেও তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। আমরা তার সঙ্গে দুবাইয়ে বিশ্ব প্যারা অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি এবং এ মাস থেকেই প্রশিক্ষণ শুরু হবে।”