মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ দাবি আদায় না হলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনকারীরা। এরই অংশ হিসেবে লং মার্চের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) শিক্ষক-কর্মচারীরা টানা পঞ্চম দিনও রাজধানীর শহীদ মিনারে অবস্থান ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দুপুর ১২টায় উপস্থিত কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী স্লোগান দিতে দেখা যায়, যেমন—‘২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিতে হবে’, ‘বাংলার শিক্ষক এক হও’, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন মানি না’ প্রভৃতি।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ দুপুরে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন পর্যন্ত ‘মার্চ টু যমুনা’ করবেন।
এ প্রসঙ্গে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের যুগ্ম সদস্যসচিব আবুল বাশার জানান, বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বাড়িভাড়া ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষকরা এটিকে ‘অপর্যাপ্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাদের কর্মবিরতি চলবে। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে অংশ নেবেন না।
এর আগে সোমবার সকাল থেকে সারাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ও পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
শিক্ষকরা বলেন, সরকারের প্রস্তাবিত বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির হার যথেষ্ট নয়। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বজনীন বদলির নীতি বাস্তবায়নের দাবিও তুলেছেন।
গত রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানকালে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছিল, যা এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরে শিক্ষকেরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
রোববার ও সোমবার রাতভর শহীদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেছেন শিক্ষকরা। কেউ প্লাস্টিকের চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটিয়েছেন। তাদের দাবি, প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন ও কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।