বাংলাদেশে সামাজিক নৈতিকতা ও মূল্যবোধ রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ১০৮টি পর্নোগ্রাফি চ্যানেল শনাক্ত করে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব চ্যানেলে অনুমতি ছাড়া অশ্লীল, যৌন উদ্দীপক ও পর্নোগ্রাফিক কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর চ্যানেলগুলোর আইডি ও লিংক যুক্ত করে টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং দ্রুত অপসারণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিটিআরসি বলেছে, সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ৮(১) ধারা অনুযায়ী অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ, ব্লক বা অপসারণের ক্ষমতা তাদের হাতে। এসব কনটেন্ট দেশের আইন ও সমাজের নৈতিক মানদণ্ড লঙ্ঘন করছে বলে কমিশনের মতামত।
এছাড়া পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর ৮(২), ৮(৩) ও ৮(৫) ধারা অনুযায়ী অশ্লীল ছবি বা ভিডিও প্রচার, বিক্রি বা প্রকাশ দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই শনাক্ত করা চ্যানেলগুলো বন্ধে টেলিগ্রামকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, অনলাইন জুয়া, প্রতারণা, পর্নোগ্রাফি ও ঘৃণামূলক কনটেন্ট রোধে তারা নিয়মিত মনিটরিং করছে এবং অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। এর আগেও ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক ও এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ অনুরূপ কনটেন্ট সরানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ১৯ অক্টোবর ঢাকার একটি আদালত টেলিগ্রামে পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত গ্রুপ, অ্যাডমিন ও অর্থ লেনদেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। ওই আদেশের পরই বিটিআরসি এই উদ্যোগ নেয়।
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, টেলিগ্রাম ও ফেসবুকের মাধ্যমে তরুণীদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও বিক্রি ও ছড়ানোর নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। অনেক সময় এসব কনটেন্ট ব্যবহার করে প্রতারণা ও অর্থ আদায় করা হয়।
বিটিআরসি জানিয়েছে, “সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা করতে অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।”