Chief TV - Leading online news portal of Bangladesh.

Header
collapse
...
Home / আঞ্চলিক / স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার কাছে রেলওয়ের জায়গা বিক্রির অভিযোগ! - Chief TV

স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার কাছে রেলওয়ের জায়গা বিক্রির অভিযোগ! - Chief TV

2025-07-31  সম্পাদক  434 views
স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার কাছে রেলওয়ের জায়গা বিক্রির অভিযোগ! - Chief TV

মোঃ জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতাঃ

বৈধ পন্থায় অবৈধ কারবার সম্পাদন করছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পাবর্তীপুর কাচারী-৮ এর কানুনগো। আর এজন্য মোটা অংকের অর্থের লেনদেনও হয়েছে। সেই সুযোগে সৈয়দপুরের এক সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা এবার রেলওয়ের বাংলো সংলগ্ন ফাঁকা জায়গা দখল করছেন। দখল সম্পন্ন হলে সেই জায়গা লিজ লাইসেন্স করে দিবেন কানুনগো, বলে জানা গেছে। প্রায় ২ লাখ টাকা চুক্তিতে এই কার্য সম্পাদন করা হবে। যার অগ্রীম হিসেবে ইতোমধ্যে ১ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাগড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকাবাসী। ফলে দখল সম্পন্ন হয়নি, তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের অফিসার্স কলোনী ধোপামাঠ এলাকায় রেলওয়ের ৫৫২ নং বাংলোর পিছনে প্রায় ৮০০ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। সেই জায়গাটি গত সোমবার গভীর রাতে টিন দিয়ে ঘিরে নিয়েছেন সৈয়দপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও ড্রিমপ্লাস রিসোর্টের এমডি তহিদুল ইসলাম। ওই জায়গা তিনি তার স্ত্রীর নামে লাইসেন্স প্রাপ্তিতে কানুনগোর নিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে এই দখল কাজ সম্পন্ন করেন। কিন্তু, এলাকাবাসী তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তারা জায়গাটি এলাকার কোন দরিদ্র ব্যক্তিকে ঘর করে বসবাসের জন্য লিজ দাবি করেছেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সরেজমিনে গেলে জায়গাটি টিন দিয়ে ঘিরে নেয়া অবস্থায় দেখা যায়।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানান, তহিদুল ইসলাম একজন বিত্তশালী এব্ং পতিত আওয়ামীলীগের দোসর। তিনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ওই জায়গা দখল করতে তৎপর। কিন্তু, আমাদের এলাকায় এমনও অনেক মানুষ আছেন যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই ওই জায়গা যদি লিজ দিতেই হয় তাহলে অবশ্যই স্থানীয় দরিদ্র কোন ব্যক্তিকেই দিতে হবে। কোনক্রমেই বিত্তশালী কাউকে এখানে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে দিবোনা। তারা আরও বলেন, রেলওয়ের লোকজন অর্থের বিনিময়ে এভাবে রেলওয়ের জায়গা দখলে উৎসাহিত করছেন এবং চোখের সামনে লিজের শর্ত ভঙ্গ করে বহুতল ভবন নির্মাণ হলেও তারা নির্বিকার থাকছেন। আর এই সুযোগে ফ্যাসিস্টদের দোসররা আগের মতই এখনও তাদের আধিপত্য বিরাজ অব্যাহত রেখেছে।

একটি সূত্রের অভিযোগ, বর্তমান কানুনগো আসার পর থেকেই সৈয়দপুরসহ পার্বতীপুর এলাকায় ব্যাপকভাবে রেলওয়ের জায়গা দখল করে বহুতল ভবন তৈরীর হিড়িক পড়েছে। তাছাড়া ঠুনকো অজুহাতে আগের লিজ গ্রহিতার লাইসেন্স বাতিল করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অন্যকে নতুন করে লিজ প্রদান করছেন। এইকসাথে একাধিক ব্যক্তিকে একই জায়গা লিজ প্রদানের ঘটনাও ঘটেছে। এভাবে বৈধতার ভান করে অবৈধ কারবার অব্যাহত রেখেছেন পার্বতীপুর রেলওয়ে কাচারী নং ৮ এর কানুনগো শরিফুল ইসলাম।

আর এ কাজে সহযোগিতা করেন তার অধিনস্ত কর্মচারী ফারুক। এই ফারুক দীর্ঘদিন থেকে এখানে কর্মরত থাকায় এই অফিসের সার্বিক তথ্য অবগত এবং সে কারণেই যখন যেই কানুনগো হিসেবে আসুক তাকে অবশ্যই ফারকের মাধ্যমে কাজ সম্পাদন করতে হয়। আর এই সুযোগে কানুনগোর পাশাপাশি ফারুকও হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

ড্রিমপ্লাস রিসোর্টের এমডি তহিদুল ইসলাম বলেন, জমি দখলের অভিযোগ সঠিক নয়। আর কানুনগোকে টাকা দিয়ে রেলওয়ের জায়গা দখল করার কোন ঘটনাই ঘটেনি। তবে আমি জায়গা খুঁজতেছি। যদি পারেন কোথায় একটু জায়গা নিয়ে দেন, বাড়ি করবো।

পার্বতীপুর রেলওয়ে কাচারী নং ৮ এর কানুনগো শরিফুল ইসলাম বলেন, সৈয়দপুর ড্রিমপ্লাসের মালিক তহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী সাবিনা বেগমের নামে রেলওয়ে জমি লিজ নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তবে তিনি যে স্থান নির্ধারন করেছেন তা তার দখলে না থাকায় এখনও লাইসেন্স করে দেয়া হয়নি। অর্থ নেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সৈয়দপুরের মানুষ কোথায় টাকা দেয়? তারাতো পাকশীতে সরাসরি গিয়ে টাকা দিয়ে লাইসেন্স করে আনে। আমাদের কাছে আসেনা। তাই সৈয়দপুরের কারো কাছে টাকা নেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।

একই অফিসের কর্মচারী ফারুক বলেন, আমি অধিনস্ত কর্মচারী। সাহেব যা করতে বলেন, তাই করতে হয়। এখানে আমার কোন নিজস্ব কর্তৃত্ব নেই। আর টাকা ছাড়া কোথাও কোন কাজ হয়না। তবে আমাদের কাছে তেমন কেউ আসেনা। বিশেষ করে সৈয়দপুরের লিজ গ্রহিতারা বেশিরভাগই সরাসরি পাকশী এস্টেট অফিস থেকেই তাদের কাজ করেন। নতুন গ্রহিতারাও সেই পথেই যান। ফলে এখানে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার সুযোগ কোথায়?


Share: