মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অস্ত্রের মুখে সাবেক এক সেনা সদস্যের পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে অর্ধকোটি টাকারও বেশি মালামাল লুট করেছে সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত দল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা জানান, ডাকাতরা স্বর্ণালঙ্কারসহ ৫৪ লাখ টাকার সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটে রোববার (২ অক্টোবর) রাতে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকায়, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সাথী বেগম, ফজলুল হকের মেয়ে, জানান—
“রাত ১টার দিকে শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তবে তখন বিষয়টি গুরুত্ব দিইনি। রাত ৩টার দিকে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে উঠলে দেখি, জানালার গ্রিল কেটে দুই যুবক বাসায় ঢুকছে। তারা প্রথমে আমাকে ও পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর আরও ডাকাত ঢুকে আমাদের চারটি ফ্ল্যাটে একের পর এক লুটপাট চালায়। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি। তারা প্রায় নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল ফোন লুট করে নেয়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের একটি রুমে আটকে বাইরে থেকে তালা মেরে যায়।”
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন,
“প্রথমে দুইজন গ্রিল কেটে ঢোকে, পরে ২২–২৩ জন বাসার ভেতরে আসে। বাইরে আরও কয়েকজন পাহারায় ছিল। তাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমার হাতেই অন্য ফ্ল্যাটগুলোর দরজা খোলায়। আমার চোখের সামনেই একের পর এক রুমে লুটপাট চালানো হয়।”
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন,
“আমার তিন ছেলে বিদেশে থাকে। তাদের পাঠানো ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েক দিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবারের সব তথ্য জানত— কোন রুমে কী আছে, ব্যাংক থেকে কখন টাকা তোলা হয়েছে, এমনকি ওয়াইফাই বন্ধ আছে সেটাও জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় কেউ এতে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করব।”
ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া জানান,
“ভোর ৫টার দিকে বিষয়টি বুঝতে পারি। পরে লক করা রুম থেকে আমরা তাদের উদ্ধার করি এবং খবর দিই। এরই মধ্যে ডাকাতরা নির্বিঘ্নে চলে যায়।”
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন,
“সকাল ৬টার দিকে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে বিষয়টি জানতে পারি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”