গত মৌসুমের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করেছিলেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার আলু চাষিরা। তবে গত তিন দিনের বৃষ্টির কারণে তাদের রোপণকৃত বীজ আলু পানিতে তলিয়ে গেছে। এ কারণে জমি থেকে বীজ আলু উঠিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।
হাঁটুসমান কাদা পানিতে নেমে একদল মানুষ মাটির নিচ থেকে তুলে নিচ্ছেন সদ্য রোপণ করা বীজ আলু।
কেউ মাটির নিচে হাত ঢুকিয়ে তুলছেন, কেউ আলু পানিতে পরিষ্কার করে সরিয়ে রাখছেন পাশের টিনের থালায়। তাদের মুখে নেই কোনো অভিযোগ, শুধু নীরবতা, মেনে নেওয়া এক বাস্তবতা। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে উপজেলার শ্রীকৃষ্টপুর ও ভদ্রকালী মাঠে।
কৃষকরা বলছেন, টানা তিন দিনের ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সদ্য রোপণ করা আগাম আলুর ক্ষেত।
বৃষ্টির পানি জমে আলুর বীজ পচে যাওয়ার আশঙ্কায় এখন সেই আলুই তুলে নিচ্ছেন তারা। হয়তো কিছুটা বাঁচবে, নইলে সবই যাবে হারিয়ে। আবহাওয়া অনুকূলে না এলে এবং জমির পানি দ্রুত না নামলে আগাম জাতের আলু চাষে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন তারা।
শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের কৃষক মোকলেছুর রহমান বলেন, আমি গত আটদিন আগে ২ বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণ করেছিলাম।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আলুর জমিতে হাঁটু সমান পানি জমে গেছে। পানির নিচে থাকলে রোপিত আলুর বীজ পচে যাবে। তাই তুলে নিচ্ছি। যদি কিছুটা ক্ষতি পোষানো যায়।
একই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন পৌর এলাকার আলু চাষি রিফাতুল হাসান।
তিনি বলেন, এবার ভালো দামে বিক্রির আশায় ৬ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু অসময়ে হঠাৎ এমন বৃষ্টিতে আমার আলু তলিয়ে গেছে। এতে পুরো ফসল নষ্ট হওয়ার ভয় করছি। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে হয়তো কৃষকরা একটু উপকৃত হবে।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় প্রায় ৫১৩ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এই উপজেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ১২৮ মিমি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলুর ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে কৃষি দপ্তরের লোকজন মাঠে কাজ করছেন ও কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
পার্শ্ববর্তী নঁওগা জেলার বদলগাছী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকায় রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।