
টলিউডে এখন ‘দেখতে সুন্দর’ হওয়ার চাপ যেন এক নির্মম নিয়মে পরিণত হয়েছে। রূপ ধরে রাখতে অনেক অভিনেত্রী বেছে নিচ্ছেন লিপ ফিলার, নোস জব, বডি শেপিং এমনকি ব্রেস্ট সার্জারির মতো প্লাস্টিক অপারেশন। কারণ, ইন্ডাস্ট্রির একটি অংশের বিশ্বাস—এইসব না করালে নায়িকা হওয়া যায় না।
এই বাস্তবতা নিয়ে এবার মুখ খুললেন ওপার বাংলার ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শোলাঙ্কি রায়। সম্প্রতি এক পডকাস্টে তিনি অকপটে শেয়ার করেন নিজের অভিজ্ঞতা, কষ্ট আর অপমানের কথা।
"আমি কখনও মুখে ইনজেকশন নিইনি, কোনও কসমেটিক সার্জারিও করাইনি," জানিয়ে শোলাঙ্কি বলেন, এই 'স্বাভাবিক' থাকার সিদ্ধান্তের জন্যই বহুবার তাকে তির্যক মন্তব্য শুনতে হয়েছে। অনেকেই বলেন, "টিভির পর্দায় তো ঠিক আছো, কিন্তু সিনেমায় তোমাকে ঠিক মানায় না।" কারণ, তার মুখে ‘কিছু করা হয়নি’!
শুধু তাই নয়, বরাবরই রোগা হওয়ায় শরীর নিয়েও কটাক্ষের শেষ নেই। আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরেছিল এতটাই, যে একসময় আত্মীয়দের অনুষ্ঠানেও যাওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। শোলাঙ্কি বলেন, "অনেকে প্রশ্ন করত, আমি এত রোগা কেন? যেন এটা নতুন কিছু!"
কিন্তু সবচেয়ে অপমানজনক অভিজ্ঞতা ছিল এক পরিচালকের সরাসরি দেওয়া পরামর্শ—
"নায়িকা হতে গেলে ক্লিভেজ থাকা দরকার। ব্রেস্ট সার্জারি করে নাও।"
এই কথা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন শোলাঙ্কি। তিনি বলেন, "আমি ম্যাচিওর ছিলাম, তাই কথা এড়িয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভাবুন তো, যদি এই কথা কোনও নতুন বা কম বয়সি মেয়ে শুনত? ওর ভিতরটা কতটা ভেঙে পড়ত!"
এ অভিজ্ঞতা আজও তাকে তাড়া করে বেড়ায়। "বাইরে থেকে শুনলে হয়তো হালকা মনে হয়, কিন্তু ভিতরে ভিতরে যন্ত্রণাটা কেবল মেয়েরাই বোঝে," বলেন তিনি।
শোলাঙ্কির এই সাহসী স্বীকারোক্তি ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—গ্ল্যামার দুনিয়ার ঝলমলে আলোচিত্রের পেছনে কতটা নিষ্ঠুর মানসিক চাপ লুকিয়ে থাকে। আর সেই অন্ধকারকে সাহস করে প্রকাশ্যে এনেই আজ আলোচনার কেন্দ্রে শোলাঙ্কি রায়।